একজন নারীর অনিয়মিত কেন মাসিক হয় সে বিষয়টি সবার পূর্বে নির্ণয় করতে হবে। যদি কারণটি খুঁজে বের করা যায় তাহলেই অনিয়মিত মাসিক হওয়ার সমস্যাটি সমাধান করা যাবে। সাধারণত ২১ দিন পূর্বে এবং ৩৫ দিন পর মাসিক হলে সেই মাসিক কে অনিয়মিত মাসিক বলা হয়। অনিয়মিত পিরিয়ড নারীর স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়।
অনিয়মিত মাসিক হওয়ার কারণে একজন নারীর শরীরের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং স্বাস্থ্যের জন্য অনেকটা ক্ষতিকর হতে পারে। তাই কখনো যদি আপনার অনিয়মিত মাসিক দেখা দিয়ে থাকে তাহলে অতিসত্বর একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করবেন। তবে অনেকেই রয়েছেন যাদের ১৫ দিন পর পর বা ১০ দিন পর পর মাসিক হয়ে থাকে।
কিন্তু কি কি কারণে একজন মেয়ে বা মহিলার এই অনিয়মিত মাসিক হয় তা অনেকেই জানেন না। তাই বর্তমান সময়ে যারা এই অনিয়মিত মাসিক হওয়ার সমস্যায় ভুগছেন। এবং কেন এই অনিয়মিত মাসিক হচ্ছে তা নির্ণয় করতে পারছেন না। তাই আজকের আলোচনা থেকে ১৫ দিন পর পর মাসিক হওয়ার কারণ কি সম্পর্কে বিস্তারিত সঠিক তথ্য জানুন।
১৫ দিন পর পর মাসিক হওয়ার কারণ কি
যদি কোন মহিলা বা মেয়ের ঘন ঘন মাসিক হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে কোন কারণে ঘন ঘন মাসিক হয় তা সবার পূর্বে নির্ণয় করা উচিত। এবং নির্ণয় করার পর অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত। কেননা এই নিয়মিত মাসিক একজন মেয়ে বা মহিলার স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকমের সমস্যা এবং বিভিন্ন রোগের দেখা দিতে পারে।
সাধারনতো পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের একজন মহিলার পিরিয়ড বন্ধ হয়ে বা অনিয়মিত মাসিক হতে শুরু করে। এছাড়াও দুশ্চিন্তা করা, অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন থাকা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করা, ধূমপান এবং মধ্যপন করা, স্ট্রেস নেওয়া ইত্যাদি কারণে ৫ দিন পর পর অথবা অনিয়মিত মাসিক হতে পারে। এছাড়া উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হচ্ছেঃ
- মাসিক চাপের পরিমাণ বেশি থাকলে।
- অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করলে।
- ধূমপান এবং মদ্যপান প্রাণ সেবন করলে।
- শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকলে অথবা হ্রাস পেতে থাকলে।
- পলিস্টিক ওভারি সিনড্রোম এর কারণে।
- শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে।
- হরমোনের ভারসাম্যহীনতা।
- অন্তঃসত্ত্বা হলে।
- অতিরিক্ত কফি পান করলে।
অনিয়মিত পিরিয়ড কেন হয়, কী করবেন
পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের কারণে অনিয়মিত পিরিয়ড হয়ে থাকে। এছাড়াও একজন মহিলা এবং মেয়ের বিভিন্ন অভ্যাসের পরিবর্তন এর কারণেও এই অনিয়মিত পিরিয়ড হয়ে থাকে। বিশেষ করে মধ্যবয়সী অথবা টিনেজার নারীদের মধ্যে এই অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা সবথেকে বেশি দেখা দিতে পারে।
এর মধ্যে উল্লিখিত ১০ দিন পরপর এবং মাসিক হলেও একনাগারে ১০ দিন পর্যন্ত থাকে। এক্ষেত্রে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে শরণাপন্ন হতে হবে। তবে ছাড়া আপনাদের সুবিধার জন্য নিজের কয়েকটি এর প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয় যেসব কারণে
কোন অল্প বয়সী মেয়ের অথবা মহিলার ক্ষেত্রে নিয়মিত ঋতুস্রাব,মাসিক দেখা দিলে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা হতে পারে। এক্ষেত্রে একজন নারীর মানসিক অশান্তি এবং মেজাজ খিটখিটে হতে পারে। সন্তান ধরনের ক্ষমতা অনেকাংশে কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
এছাড়াও মাসিক এর সময় বেশি সময় ধরে এবং বেশি পরিমাণে র*ক্তপাত হওয়া। তবে এই অনিয়মিত ঋতুস্রাব থেকে যদি মুক্তি পেতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনাকে এর কারণ গুলো নির্ণয় করতে হবে। তাই নিচের পয়েন্ট গুলো থেকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয় যেসব কারণে তা জেনে নিন।
- অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা এবং মানসিক চাপে থাকার কারণে।
- জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়ার কারণে।এবং
- হঠাৎ জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিলে হতে পারে।
- শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাওয়াতে।
- অতিরিক্ত পরিমাণ শরীর চর্চা করলে।
- জরায়ুর টিউমার ও এন্ডোমেট্রিওসিস।
- জরায়ুর বিভিন্ন জটিলতার কারণে হতে পারে।
- যেসব নারী শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ান সেসব নারীর অনিয়মিত ঋতুস্রাব হতে পারে।
১৫ দিন পর পর মাসিক হলে তার প্রতিকার
২১ দিনের পূর্বে যদি করো মাসিক হয় তাহলে সেটাকে অনিয়মিত মাসিক হিসেবে ধরা হয়। তাই আপনার যদি ১৫ দিন হয় পরপর মাসিক তাহলে অবশ্যই বিষয়টিকে গুরুত্বের সহকারে দেখতে হবে। এবং অতি সত্বর একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে কিছু কিছু প্রতিকার রয়েছে যেগুলো আপনাকেই সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে। এবং অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আর প্রতিকার গুলো সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানুন।
- সর্বপ্রথম আপনাকে সবসময়ই দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে।
- নিজেকে সবসময় পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
- যথাসম্ভব নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করতে হবে।
- সকল প্রকার ফাস্টফুড এড়িয়ে চলা উচিত।
- স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতে হবে।
- টক জাতীয় ফলমূল খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- শরীরের ভিটামিন ঘাটতি পূরণের জন্য বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- অল্প বয়সী মেয়েদের অবশ্যই হরমোন পরীক্ষা করতে হবে।
শেষ কথা
আশা করতেছি ইতিমধ্যে এই আলোচনা থেকে আপনাদের অনুসন্ধান করার তথ্য সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। তবে আজকে আলোচনায় সম্পূর্ণ সঠিক তথ্য আপনাদেরকে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ১৫ দিন পর পর মাসিক হওয়ার কারণ কি যদি এই পোস্ট থেকে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার আশেপাশের ব্যক্তিদেরকে শেয়ার করে দিন। ধন্যবাদ
আমি মো সাগর, ইনফো গুরু ওয়েবসাইট এর একজন লেখক। এই সাইটে আমি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখা লেখি করে থাকি। আমি সর্বদা এই সাইটে তথ্যবহুল ও সঠিক ইনফো প্রদান করার চেষ্টা করি। আশা করি এই সাইটের লেখা গুলো আপনাদের ভাল লাগবে। ধন্যবাদ।